।।১।। মাঝরাত। দোকানপাট বন্ধ। যাত্রীবাহী গাড়ীঘোড়া দূরস্থ; অতন্দ্র সেপাইয়ের মত সারারাত যেসব লরি-ট্রাক-ম্যাটাডোর পায়চারী করে, কারো দেখা নেই আজ। আশেপাশের সমস্ত বাড়ীতেই আলো নিভে গেছে ততক্ষণে। ছাপোষা মধ্যবিত্ত গৃহস্থের এ সময়ে কোনো কাজ থাকবার কথাও নয়। আমাদের বাড়ীর সামনের রাস্তায় সমস্ত ল্যাম্পপোস্ট অচল। সামনের তিনমাথার মোড় থেকে যে গলিটা সামান্য বাঁদিকে বেঁকে গেছে সেখান থেকে একটুআধটু ম্লান আ লো চুঁইয়ে এসেছে মাত্র। দু-একটা নেড়ী কুকুর ছড়িয়েছিটিয়ে শুয়েবসে আ ছে এদিকসেদিক। বাতাসে অল্প গুমোট ভাব। নিঃঝুম থমথমে পরিবেশ। তারপর, কেউ কিছু জানবার আগেই কাকিনী সরোবরের মত ঘন নীল-কালো আকাশ আস্তে আস্তে লালচে বেগুনী হতে থাকবে, আর অশুভ সংকেতের মত ধুলোটে আস্তরণে অস্পষ্ট হয়ে আসবে সে রঙ। চাঁদ তারা ইত্যাদি দূরসম্পর্কের আত্মীয়দের মাঝখানে দুর্ভেদ্য দেওয়াল উঠবে। মন্দ্রস্বরে মেঘ ডাকবে দরবারী গাইয়ের হরকতের মত। তাকে আড়াল করবার মত চারদিকে কোনো সভ্যজগতের শব্দ নেই। তাই একটু পরেই, পর্দান শী ন সালঙ্কারা অন্তঃপুরবাসিনীর অন্ধ করে দেবার মত রূপ নিয়ে বিদ্যুৎ ঝলসে উঠবে বেপরোয়া। আকাশ ভেঙে প্রলয়ঙ্করী বৃষ্টি নামব...
কুলুঙ্গি - বারকোশ - সিন্দুকে তালাবন্ধ জীবাশ্মের কথকতা